Antegoni’s Facebook

চরিত্র: রাজা ক্রেয়ন, রানী ইউরিডিকে, রাজ পুত্র হাইমন, রাজা ইডিপাস এর কন্যা আন্তেগনি, অন্ধ ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা টেরেসিয়াস, কথক, টুইটার, ফেসবুক, বার্তাবাহক।

রাজা ক্রেয়ন ও রাজপুত্র হাইমনের সংলাপ

রাজার সাথে আন্তেগনির সংলাপ

ইপড ( টুইটার ও ফেবুর সংলাপ)

অন্ধ ভবিষ্যত দ্রষ্টার সংলাপ

বার্তা বাহকের সংলাপ

ইপড (কবিতা আবৃত্তি)

কথক: গ্রীক নাট্যকার সোফোক্লেস, নব্বই বছরের কর্মময় ঘটনাবহুল জীবনে একশো পঁচিশটি নাটক লিখেছেন বলে অনুমান করা হয়। এর মধ্যে প্রায় পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় টিকে আছে মাত্র সাতটি ট্রাজেডি। প্রায় প্রতিটিই অনূদিত হয়েছে অধিকাংশ প্রধান ভাষায়। মঞ্চস্থ হয়েছে বহু শহরে- বিবিধ এডাপ্টেশনে। আন্তিগোনি ফেসবুক থেকে জেনে নেই নাটক এর ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরন :

ফেসবুক– থিবী নগরে ক্ষমতার লড়াইয়ে ঈদিপাস এর দুই পুত্র, এতেওক্লিস ও পলিনীকিসের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শেষ হবার পরের দিনের ঘটনা। লাইয়োস বংশের কোনো পুরুষ বংশধর জীবিত না থাকার কারণে নগরের নতুন রাজা হয় ক্রেয়ন। নতুন রাজা ক্রেয়ন নগর রক্ষার লড়াইয়ে নিহত আন্তিগোনির এক ভাই এতেওক্লিস কে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে সমাধিস্থ করেছে; কিন্তু আরেক ভাই- পলিনীকিসের মরদেহকে কবর দেওয়ার বিরুদ্ধে জারি করেছে এক নিষ্ঠূর নিষেধাজ্ঞা! ক্রেয়ন ঘোষণা করে যে, পলিনীকিসের মৃত্যুতে কেউ কোনো প্রকার শোক-বিলাপ করতে পারবেনা! সেই দেহ সমাধি বঞ্চিত অবস্থায় মাটির ওপরে পড়ে থাকবে, পচবে; কুকুর আর শকুন ছিন্ন ভিন্ন করবে সেই লাশ। আন্তিগোনির বোন  ইসিমিনি নিজের প্রাণ বিপন্ন হওয়ার ভয়ে রাজার নিষেধাজ্ঞা মুখ বুজে মেনে নিতে চাইলেও আন্তিগোনি এই ধর্ম বিরোধী আদেশ পালনে বিদ্রোহ করে। প্রহরীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে সে পলিনীকিসের মরদেহের ওপর ছিটিয়ে দেয় মাটি, এবং পালন করে ফিউনারেল এর  আচার-অনুষ্ঠান।

টুইটার– কিন্তু ঘটনাক্রমে আন্তিগোনির তৎপরতা জানতে পেরে ক্রেয়ন গ্রেপ্তার করে তাকে। আন্তিগোনি এখন মৃত্যুর মুখোমুখি। পাহাড়ের অন্ধকার এক গুহা প্রকোষ্ঠে বন্দী সে। আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই ক্রেয়ন পুত্র হাইমনের সঙ্গে তার বাসর শয্যায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর বদলে মৃত্যুই কি আজ তার শয্যাসঙ্গী হতে যাচ্ছে? এরপর প্রেমিক হাইমন পার্বত্য গুহায় ছুটে যায় জীবন্ত সমাধি থেকে আন্তিগোনিকে উদ্ধারের জন্যে। প্রানপনে পাথরের স্তুপ সরিয়ে সে দেখে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। তারপর ঘটতে থাকে নির্মম সব ঘটনা- একটির পর আরেকটি। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত থিবী নগরের আকাশে আরো একবার দেখা দেয় অশনি সংকেত।

দৃশ্য: ক্রেয়ন ও হাইমন

কথক: নগরের দিক থেকে হাইমনের আগমন। ওই দেখ আসছে হাইমন-রাজা ক্রেয়নের কনিষ্ঠতম সন্তান আন্তিগােনির পরিণতির কথা ভেবে সে কি শােকে মুহ্যমান? নিজেকে বিবাহশয্যা ও বধূবঞ্চিত ভেবে সে কি বেদনা ভারাক্রান্ত? 

ক্রেয়ন: আমরা তা শীঘ্রই জানতে পারব-কোনাে দ্রষ্টার প্রয়ােজন হবে না। হে পুত্র, তুমি তাে ওর সম্পর্কে আমার চুড়ান্ত রায় শুনেছ। এখন বলাে- তুমি তােমার পিতার বিরুদ্ধে কি ক্ষোভ নিয়ে এসেছ? নাকি তুমি আমার সিদ্ধান্ত মেনে নেবে? 

হাইমন: হে পিতা, তােমার আদেশ তাে আমার ভালাের জন্যই। তােমার উপদেশ আমাকে ঠিক পথেই রাখবে এবং আমি অবশ্যই তা মেনে চলব। কোনাে বিবাহ সম্পর্ক তােমার অভিভাবকত্বের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। 

ক্রেয়ন: ঠিক বলেছ পুত্র; সকল ক্ষেত্রে পিতাকে অনুসরণ করতে চাওয়াটা সর্বশ্রেষ্ঠ। পুরুষেরা এটাই প্রার্থনা করে: ঘরভর্তি অনুগত-বিশ্বস্ত সন্তানাদি তাদের পিতাকে রক্ষা করবে তার শত্রুর হাত থেকে, এবং তার মিত্রদের করবে শ্রদ্ধা। যে মানুষ অযােগ্য সন্তানদের জন্ম দেয় সে যেন নিজের পিঠে আঘাত করার জন্য নিজেই লাঠি বানিয়েছে। এ ছাড়া তাকে নিয়ে আর কীই বা বলার আছে? আর শােন, পুত্র আমার-কখনই রমণীর আনন্দে প্ররােচিত হয়াে না; 

সে আগুন দ্রুতই নিভে যাবে; আর তােমাকে অপছন্দ করে এমন কারাের শয্যাসঙ্গী হওয়ার চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না। একজন ভণ্ড প্রেমিক পুঁজপূর্ণ ঘা থেকেও নিকৃষ্ট। ওকে শত্রু মনে কর পচা নষ্ট খাবারের মতাে থু করে ফেলে দাও মুখ থেকে। মেয়েটা ওর আসল স্বামীকে ‘এদিসে’ খুঁজে নিক। প্রকাশ্যে অবাধ্যতার সময় আমি তাকে ধরে ফেলেছি। এ নগরে একমাত্র সেই এমন দুঃসাহস দেখিয়েছে। জনগণের সামনে দেওয়া জবান থেকে আমি পিছু হটব না। আমি ওর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করব। আত্মীয়তার দেবতা জেউসের কাছে ও যত খুশি অনুনয় করুক, আমি যদি নিজ পরিবারকেই অবজ্ঞা করতে দেই আমার আদেশ, সবাই তাে একই কাজ করবে। 

যে পুরুষ তার পরিবারকে ন্যায়পরায়ণতার সাথে শাসন করে সে নিজেও একজন নীতিবান নাগরিক। কিন্তু যে মানুষ আইনের শাসন লঙ্ঘনের চেষ্টা করে অথবা নেতাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে নিজের ইচ্ছা, আমার কাছ থেকে সে কোনাে অভিনন্দন পাবে না। নগর যাকে দায়িত্বে নিয়ােগ দেয়, ছােট-বড় সকল ক্ষেত্রে তার প্রতি আনুগত্য খুব জরুরি। হােক তার দাবি সঠিক কিংবা একদম বিপরীত আমি আত্মবিশ্বাসী যে সে সমান দক্ষতায় নগরকে নেতৃত্ব দেবে, নগরের সেবা করবে, সাহসী সহযােদ্ধা এবং রক্ষকরূপে সে-ই পুরােভাগে দাঁড়াবে। নৈরাজ্য থেকে বড় অশুভ আর হয় না, যা ধ্বংস করে নগর, ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে বাড়িঘর, ওলটপালট করে পদবিন্যাস, ডেকে আনে বিশৃঙ্খলা এবং অবনতি। শেষ বিচারে আনুগত্যই অধিকাংশ মানুষকে রক্ষা করে, আর তাই আমাদের রক্ষা করতে হবে নগরের শৃঙ্খলা; কোনােভাবেই আমরা একজন নারীকে বিজয়ী হতে দিতে পারি না। একজন নারী কাছে দুর্বল প্রতিপন্ন হবার চেয়ে অন্য যে কোনাে প্রকারের মানুষের কাছে পরাজিত হওয়া শ্রেয়। 

টুইটার: বার্ধক্য যদি আমাদের বিচারবুদ্ধি ছিনিয়ে নিয়ে না থাকে তাহলে বােধ করি আপনার বক্তব্য সঠিক অর্থবহন করে। 

হাইমন: দেবগণ তাে মানুষকে দিয়েছে সর্বোচ্চ উপহার- যৌক্তিক চিন্তার ক্ষমতা। আমার পক্ষে কথাটা বলা খুব কঠিন; কীভাবে বলব ঠিক বুঝতে পারছি না। কথাটা হলাে-সর্বক্ষেত্রে তুমি…Work in Progress

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *