একটি ফ্রেঞ্চ কানাডিয়ান ফোকলোর
ফোকলোর রূপকথা বা লোক গল্প সংগৃহীত হয় লোক মুখে। বর্তমানে ইন্টারনেটে অনেক লোক গল্প গাঁথা বিশ্বময় ছড়িয়ে আছে। এমনই একটি ফ্রেঞ্চ কানাডিয়ান ফোকলোর ‘শুশু’।
অনেক অনেক দিন আগে টানটে ওডেট নামে এক বৃদ্ধ মহিলা, কুইবেক এর এক গ্রামে বাস করতো। সঙ্গে ছিল তার পুশি বিড়াল- শুশু। টানটে ওডেট খুব সাবধানী মহিলা ছিল। নিজের মতো করে থাকতেই তার বেশি পছন্দ। সে কখনও কিছু অপচয় করতো না। এক বাটি সুপ চুলার উপরে শে তাপ দিতে থাকে অল্প আগুনে। টানটে ওডেট প্রতিদিন সেই ফুটন্ত পানিতে বাধাকপি পাতা ছেড়ে দিতো আর বাটিতে যোগ করতো বাড়তি জল। এইভাবে সে অপচয় ঠেকাত। প্রতি রবিবার সে রুটি তৈরী করে। বৃহস্পতিবার আসার আগেই যদি বাসি হয়ে যায় তবে সে রুটি টোস্ট করে গরম সুপে ডুবিয়ে খায়। শুশুও রুটি আর সুপ ছাড়া বাড়তি কিছু চায় না।
প্রতি রাতে টানটে ওডেট খাবার দাবার সেরে চুলার পাশে উল বুনতে বসে। শুশু ডোরাকাটা লাল কার্পেট এর উপর লেজ গুটিয়ে বসে থাকে। থেকে থেকে ঘরঘর শব্দ করে কার কাছে কি নালিশ জানায় কে জানে। টানটে ওডেট বিদ্রুপতাত্মক ভঙ্গিতে শুশুর দিকে তাকায়। হেসে বলে, ‘আমরা কি চমৎকার দুই সঙ্গী তাই না শুশু? যদিও মাঝে মাঝে আমি ভাবি তুমি যদি কথা বলতে পারতে।’
এক সন্ধ্যায় টানটে ওডেট তার চুলার পাশে বসে আছে আর শুশু কার্পেটে শুয়ে আছে। হঠাৎ দরজা কড়া নড়ার শব্দ শুনতে পেল। টানটে ওডেট দরজা খুলতেই দেখতে পেলো এক অদ্ভুত মানুষ যার কোমরে লাল রঙের মোটা বেল্ট, লাল চেকের শার্ট, আর টুপি। টুপির কানে একটা কালো পালক গুজা।
‘ম্যাডাম’, লোকটি মাথা নিচু করে সৌজন্য প্রকাশ করলো, ‘আমি পিয়েরে লাব্লান্ক, আর আমি এই জন্যে আপনার কাছে আসছি যে আমি যেনো আপনার কাজে লাগতে পারি। তবে আমি এত বয়স্ক যে আমি শিকার কর্ম পরিচালনা করতে পারি না। এমনকি আমি কারখানাতে শ্রম ও করতে পারিনা। আর আমি আপনার বাসার মতো একটি সুন্দর জায়গায় চাকরি খুজছি।’ টানটে ওডেট কাপড়ের আচল টেনে যন্ত্রচালিত কণ্ঠে উত্তর দিল দ্রুত ‘আমার কোনো সাহায্য দরকার নাই’। সে বললো, ‘আমি আমার সব কাজ নিজেই করে ফেলি। আর তা ছাড়া আমার পাশে আছে আমার বিড়াল শুশু।’
সে পিয়েরের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল। কিন্তু পিয়েরে দরজা ধরে থাকলো। পিয়েরে শুশুর দিকে তাকালো। ‘আ হাহ’, পিয়েরে বললো, ‘এই বিড়াল টিকে দেখেত মনে হয় সে খুব জ্ঞানী। আপনি একেই না হয় জিজ্ঞাসা করুন আমার চাকরি’র ব্যাপারে। আমার শ্রমের বিনিময়ে থাকার জায়গা ছাড়া আর কিছুই চাই না আমি।’
‘হাহ!’ টানটে ওডেট বিদ্রুপের হাসি ছুড়ে বলে, ‘বিড়াল কখনও কথা বলে না’; কিন্তু সেই মুহূর্তে, আশ্চর্যের ব্যাপার, শুশু কথা বলা শুরু করলো। ‘অবশ্যই আমি কথা বলতে পারি’, শুশু বলে, ‘এতদিন এমন কোনো গুরুত্বপূর্ন ঘটনা ঘটে নাই আজকের এই মুহূর্ত ছাড়া যেই জন্যে আমি কথা বলতে বাধ্য হলাম। এই পিয়েরে লাব্লাঙ্ক কে আমার কাছে ভালো মানুষ বলেই মনে হয়, পরিশ্রমী ও সৎ। আমি মনে করি তাকে কাজে নেয়া উচিত।’
পিয়েরে লাব্লাঙ্ক এর গোঁফ কেপে উঠল এবং সে মুচকি হাসলো। টানটে ওডেট শুশুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। তারপর পিয়েরের দিকে তাকায়। নিঃশব্দ সময় পার হয়। নিস্তব্ধতা ভেংগে টানটে ওডেট বলে, ‘বেশ, এই রকম ঘটনার নজির খুব একটা মেলে না যে বিড়াল ও কথা বলে উঠে ঘটনার আবেগে। তাই আমি মনে করি বিড়ালের কথাই আমার শোনা উচিত।’
পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দিলো। সে দীর্ঘ সময় ধরে চুলার উপর টগবগে ফুটন্ত সুপের বাটির বলকানি লক্ষ্য করছে। এতে সুপের কাল্পনিক স্বাদ মজ্জায় অনুভূত হচ্ছে। ‘মানুষটাকে একটু সুপ খেতে দাও,’ শুশু বললো, ‘তাকে খুব ক্ষুধার্থ মনে হচ্ছে।’
টানটে ওডেট সব সময় বাজে অপচয় রোধে তৎপর। এই শংকা এবার তার মস্তিস্কে বিপদ সংকেত পাঠালো। একজন অজানা অচেনা পরিচয়হীন আগন্তুক যদি এই সুপে ভাগ বসায় তাহলে তো এক সপ্তাহেই শেষ হয়ে যাবে। সে কিছুক্ষণ চিন্তা করে জানালো, এটা খুবই বিরল যে বিড়াল কথা বলে, তাই আমি মনে করি তোমাকে এক বাটি সুপ খেতে দেয়া আমার কর্তব্য।’ পিয়েরের খাবার পর্ব শেষ হলে শুশু ঘাড় কাত করে টানটে ওডেট এর দিকে তাকায়। ‘এখন তার শোবার বন্দোবস্ত করো। তাকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে।’
এইবার টানটে ওডেট তাড়াতাড়ি কথামতো কাজ করলো। টানটে ওডেট পিয়েরেকে তার শোবার ঘর দেখিয়ে দিয়ে শুশুকে কোলে নেয়। সে শুশুর বড় বড় সবুজ চোখের দিকে তাকায়। সে কিছুক্ষণ চিন্তা করে বলে ফেললো, ‘কি মজার ব্যাপার শুশু! এতদিন চুপ থাকার পর এখন তুমি কথা বলতে শুরু করলে। তোমার উপর কি এসে ভর করলো, ও আমার শুশু।’ শুশু তার লেজটা একটু নাড়ালো, তারপর তার সুন্দর সোনালী পশমি শরীরের পাশে লেজ রেখে ঘুমিয়ে পড়ল।
কয়েক সপ্তাহ পর টানটে ওডেট বুঝলো যে শুশুর পরামর্শ ভালো ছিলো। পিয়েরে লাব্লাঙ্ক অনেক পরিশ্রম করে। সে জায়গাটাকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখে। তাকে দেখে তুস্ট মনে হয়। সে সুপ আর রুটি ছাড়া আর কোনো কিছুর দাবি তুলে নাই। শুশুও আর কোনো কথা বলে নাই।
একদিন রাতে যখন পিয়েরে সুপ পান শেষ করে, শুশু আবার কথা বলে, ‘টানটে ওডেট’, সে বললো, ‘তুমি কেন পিয়েরে কে শুধু সুপ আর রুটি খেতে দাও? যেই লোকটা এত পরিশ্রম করে, তার তো মাংস জাতীয় পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন।’ ‘কিন্তু শুশু’, টানটে ওডেট বললো, ‘মাংসের দাম বেশি। মাংস কিনতে টাকা লাগে’।
‘টাকা, টাকা, টাকা,’ শুশু সুতীক্ষ স্বরে ভর্তসনা করে বলে, ‘তুমি টাকা খেতে পারনা। তুমি টাকা পান করতেও পারনা। তুমি টাকা জামার মতো গায়ে পরতেও পারনা। তুমি টাকা পোড়াতেও পারনা ঘর উষ্ণ রাখার জন্য। টাকা তখনই অর্থ হয় যখন টাকা খরচ হয়। পিয়েরের কাছে কিছু টাকা দাও, সে শহর থেকে আমাদের জন্য কিছু ভালো মন্দ বাজার করে নিয়ে আসুক।’ আরেকবার টানটে ওডেট শুশুর উপদেশ অনুসরণ করলো। তারপর থেকে রান্নাঘরটি আমিষ ও মিষ্টি জাতীয় সুখাদ্যে পরিপূর্ন হলো।
একদিন পিয়েরে যখন ঘরের কাছেই একটি জঙ্গলে কাঠ কাটতে গেছে, তখন গঞ্জের রাস্তায় আর একজন নতুন আগন্তুকের দেখা মিললো। তার গায়েও লাল রঙের চেক শার্ট, কোমরে মোটা বেল্ট আর টুপিতে কালো পালক গুজা। সে টানটে ওডেট এর বাসার দরজায় এসে দাড়ালো এবং শব্দ করলো। যখন টানটে ওডেট দরজা খুললো, সে বললো, ‘‘মাদাম’ পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক এখানে থাকে কিনা আপনি বলতে পারেন?’ ‘অবশ্যই সে এখানে থাকে,’ টানটে ওডেট হাসিমুখে বলে।
‘অবশ্যই!, আগন্তুক বলে, ‘ পৃথিবীতে পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক নামে অনেক মানুষ আছে। এই পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক কি আমার মতো মোটা লাল চকচকে বেল্ট আর লাল চেক শার্ট পড়ে? আর এই পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক এর কি আমার মতো একটা লম্বা মোচ আছে?’ ‘এই সেই লোক,’ টানটে ওডেট বলে। ‘আর এই পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক কি তার নিজের কন্ঠ স্বর নিক্ষেপ করতে পারে?’ টানটে ওডেট উৎসুক হয়ে বলে, ‘এটা তুমি কি বলছ?’
‘খুব কম মানুষই এইরকম দক্ষতার অধিকারী’, আগন্তুক বুঝিয়ে বলে, ‘প্রতি হাজারে এক জন এই রকম দক্ষতা অর্জন করতে পারে। কিন্তু আমি যে পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক কে খুজছি, সে তার কন্ঠস্বর গাছের পেছনে পাঠাতে পারে। অথবা বাক্সের ভিতর। ছাদের উপর। রুমের বাইরে। তাই যখন সে কথা বলে, তখন মনে হয় অন্য কেউ কথা বলছে।’
টানটে ওডেট কে বিচলিত মনে হলো। ‘আমি কখনই এই রকম মানুষদের আমার ঘরে জায়গা দিবো না’, সে চিত্কার করে বললো; ‘আমি জাদুগিরি পছন্দ করি না।’ এমন সময় পিয়েরে লা ব্লাঙ্ক’কে বাসায় আসার রাস্তায় দেখা গেলো। পিয়েরে আগন্তুককে দেখা মাত্রই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলো আনন্দে উত্তেজনায়।
‘আহ পিয়েরে, তুমি কোথায় লুকিয়ে ছিলে পুরা গ্রীষ্মকাল ধরে? আমি চাই তুমি আবার আমার সাথে শিকার কার্যে নাম এই সামনের শীত কাল থেকে,’ আগন্তুক বললো; তারপর তারা খোশ গল্পে ঠাট্টা মস্করা নিয়ে মেতে উঠলো রান্না ঘরের টেবিল ঘিরে।
টানটে ওডেট শুশুর দিকে তাকালো, ‘ও আমার শুশু, এর মানে কি? আমার ভয় করছে, এই পিয়েরে কে একটা আস্ত শয়তান বলে মনে হচ্ছে।’ শুশু উপরে তাকিয়ে একটা চোখ টিপে আস্বস্ত করে, ‘ওহ টানটে ওডেট তুমি শুধু শুধু আজে বাজে চিন্তা করছো। সে একজন খুবই উচ্চ মার্গের মানুষ।’
‘কিন্তু ঐ নতুন লোকটি বলে যে সে তার কন্ঠস্বর যেখানে খুশি সেখানে পাঠাতে পারে।’
‘হাহ’, শুশু বলে, ‘আমি কখনই এমন বোকার মতো কথা শুনি নাই। কেউ কন্ঠস্বর পাঠাতে পারে না।’
টানটে ওডেট সোয়াস্তির নিঃশাস ফেললো। বিগত দিন গুলির দিকে তাকিয়ে টানটে ওডেট পিয়েরের কাজের ব্যাপারটা ভাবলো। তারা কত সুখেই না দিন কাটাচ্ছিলো পিয়েরের উপস্থিতিতে। সে পিয়েরের পাশে এসে দাড়ালো। ‘তুমি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেনা নিশ্চয়ই? তুই যদি থাকো, তাহলে আমি তোমাকে তোমার কাজের জন্যে পারিশ্রমিক দেব।’
পিয়েরে হাসলো। তার মোচ একটু কাপলো। সে উঠে দাঁড়িয়ে বিনয় প্রকাশ করলো। মাথা নত করে শুশু ও টানটে ওডেট এর প্রতি সৌজন্য প্রকাশ করলো। ‘আমি শুশু ও তোমার সাথে থাকতে পেরে খুবই আনন্দিত,’ সে বললো, ‘এখন আমি বাইরে যাবো, কাঠের বস্তা নামাবো, এবং দরজার কাছে সুন্দর করে গুছিয়ে রাখবো।’ যাবার সময়তার লাল বেল্ট ঝুন ঝুনির মতো বেজে উঠে চলে । শুশু কার্পেটে শুয়ে থাকে। সবুজ একটি চোখ খোলা রাখে, অপরটি বন্ধ। খুব শীগ্রই সেও ঘুমিয়ে পড়ল।
Students work on Tasks to learn the Bangla alphabet.
Learning goal: I can identify the Bangla alphabet
I can write Bangla using a keyboard.
An American psychologist Howard Gardner’s theory of multiple intelligences (MI) proposes that people are not born with all the intelligence they will ever have.
I can identify the days of the week in Bangla.
I can identify the numbers in Bangla.
শু