ফুল ফুটে টবে ঝুলে থাক ২

দিয়েছে মাথা চাড়া, বিল্ডিংটা আটতলা; বিল্ডিং এর নিচে ওভাল পার্কে, জন্মেছে টিউলিপ চারা। দিয়েছে মাথা চাড়া। বাগান ভরা গাছগুলা রয়েছে দাঁড়ায়ে ঝাড়া;  আমার জানালা ভরা, রাশি রাশি রৌদ্র ছায়া, করতে আছে খেলা, জটা মাথায় নতুন পাতা, পাতায় ভর করে নবীন কুড়ি, এই শহরের মাঝে শিঘ্রী; হে বসন্ত! কর আসন গ্রহণ; কবির রিদয় আজ দিয়েছে মাথা চাড়া, জন্মেছে বাগান ভরা টিউলিপ চারা। শুভ বসন্ত। 

আসছি বলে জবান দিলা খালি – বলে, সাদা শার্ট খাকি প্যান্ট পরা এক মালি, বাগানের বেঞ্চে বসে দেয় অনবরত গালি, রবিন আর বুলবুলি প্রেমে মজে আসেপাশে। টিউলিপ ফুল ফুটে টবে ঝুলে থাকে,  জীবনানন্দের হরিণ গুলি এসেছিলো ক্ষেতে জোৎস্নায় গভীর রাতে, এসেছিলো তারা ধীরে ধীরে গভীর বনের রাস্তা ছেড়ে, নদীর কিনারে। হরিণীর ডাক শুনে ক্যাম্পে

ঝাক ধরে উড়ে যাক মরার বুলবুলি, যেন না খায় গুলি, তারা এ যুগের ড্রোন উড়ন্ত মৌমাছি, প্রেমে মজে আসেপাশে রেনু বাহি পাখি, যেখানে পাক মৌচাক যাক তারা মজে, পানির ফোয়ারার কাছে, মরুক যত ছায়া শিকারী আছে তাদের পিছে,  মনে ছিল ভাব, জায়গা যদি থাকে একটুখানি বসে থেকে যাবো; তৃষ্ণার্ত হরিণ আমি  হরিণীর ডাক শুনে পেয়েছি আশ্বাস,  আজ সব হরিণেরা দূর্বা ঘাস, ধূলিময় দিনে ফেলি নিশ্বাস

এইখানে পার্কে বেঞ্চে একটুখানি বসে থাকা যাক, নিষিদ্ধ ফুল ফুটে টবে যেন ঝুলে থাক; অনেক দিন পর সঙ্গে আমার বন্ধু আবার, তাড়া নাই কোনো ঘরে ফিরবার আমার, তবে  ফিরে যেতে হবে স্বদেশ এবার। যেখানে ইচ্ছা ছিল পাসাপাশি বসবার, স্বদেশ বলছি আসলে খুঁজছি নদীর পার। 

জায়গাটা পছন্দ খুউব? 

জিগায় আবার। হাডসন নদীর পার, যেখানে মৌমাছি প্রেম করে ঘাসের শয্যায়, বসার জায়গা নাই সেখানে আর, কোথায় পাই খুঁজে জায়গা যাওয়ার? কোথাও আর নাই জায়গা যাওয়ার, মৌমাছি মোহিনী দংশায় এইবার, এর চেয়ে বেশি আর কি ছিল দরকার। ওইদিকে যাওয়া যায় এলিস আইল্যান্ড, 

ফেরি করে পার হই ম্যানহাটন, 

সেখানেও ঠাই নাই, ঠাই নাই পা ফেলার, এমন ই উন্নত পর্যটন ব্যবস্থার, কবে হবে অবসান প্রতিটি অপেক্ষার। পার্কের বেঞ্চে বসে শুধু অবসর কাটাবার!

সময় দিলে কি যায় দেখা পরিপূর্ণতার। যাযাবর সময় আর হাডসন নদী অপেক্ষা করে বন্যার; এখন আর ইচ্ছাই নাই, পার্কের বেঞ্চে বসে অবসর কাটাবার; নাই কোনো কাজ সত্যই বাকি আমার, বসন্তে ফুটে কুড়ি, মেয়েরা সাজে পরী, ভালো লাগে সবার, জন্মেছে নতুন কুড়ি, তাই দিয়ে তৈরী করি খোপায় ফুল, গলার মালা, কানের দুল, হাতের বালা, ও চুড়ি।