The Old Man And The Sea

“হেরে যাওয়ার জন্য মানুষের জন্ম হয় নি। মানুষ ধ্বংস হতে পারে কিন্তু পরাজিত হয় না ” তা’ই দেখানো হয়েছে The Old Man And The Sea বইটি তে।

সান্তিয়াগো বৃদ্ধ। সমুদ্রে মাছ ধরে বেড়ায়।  বয়স হওয়া সত্বেও তার দেহে যতেষ্ট বল রয়েছে। মাছ ধরার যতেষ্ট কৌশলও তার জানা। কিন্তু তার কপালটা খুবই খারাপ। টানা প্রায় আশি দিন সে কোনো মাছই ধরতে পারে নি। মাছ না ধরতে পাওয়ার ৪৫ দিন এর মাথায় তার সাথের ছেলেটিও ( ম্যননোলিন) আসা বন্ধ করে দিয়েছে। সান্তিয়াগোর সাথে থেকে ও কোনো মাছ ধরতে পারছে না দেখে তার বাবা মা তাকে অন্য দলের সাথে দিয়ে দিয়েছিল। যদিও ছেলেটি সান্তিয়াগোর সাথে থাকতে পছন্দ করত। এখন সান্তিয়াগো একাই মাছ ধরতে যায় সমুদ্রে। 

আজ ৮৫ তম দিনে সান্তিয়াগো আবার মাছ ধরতে বেরিয়েছ। নৌকায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সে সমুদ্রে বেরিয়ে পড়ল। এবার সে অনেক দুরে বাইরের সমুদ্রে চলে গেল। অবশেষে একটা বড় মার্লিন মাছ তার বড়শিতে আটকা পরল। বড়শির দড়ি ছিড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে দড়ি না টেনে ধরে বসে থাকল। মাছটি বড়শির দড়ি সহ নৌকা নিয়ে সমুদ্রের অসিমের দিকে চলতে লাগলো। এভাবে ২ দিন পার হয়ে গেল। এর মধ্যে সান্তিয়াগো দুটা টোনা মাছ খেয়ে নিয়েছে। সীমাহীন সমুদ্র, মাথার উপরে বিস্তির্ণ আকাশ, একটা দুটো চিল উড়ে যায় ; হঠাৎ সবকিছুর জন্য সান্তিয়াগোর মায়া হতে লাগল। এমন কি যে মাছটা তার নৌকা টেনে নিয়ে যাচ্ছে_ তার উপরও। 

সান্তিয়াগো ভাবছে আজ ছেলেটি থাকলে অনেক উপকার হত। এভাবে চলতে চলতে এক সময় মার্লিন মাছটি জলের উপরে উঠে আসল। সান্তিয়াগো তার হার্পুন দিয়ে সেটিকে আঘাত করে নিজের আয়ত্তে আনে। মাছটি ছিল অনেক বড়। এটাই তার শিকার করা সবচেয়ে বড় মাছ। তার নৌকায় মাছটির জায়গা হবে না বলে সে এটিকে পানির মধ্যে রেখেই দড়ি দিয়ে নৌকার সঙ্গে বেধে দিল। এবার সে দ্বীপের ( সান্তিয়াগো যেখানে থাকে)  উদ্দেশ্য রওনা করল। সে আসলে বাইরের সমুদ্রে অনেক দুরে চলে এসেছিল। এত কিছুর পর তার শরিরেরও অবস্থা খারাপ। মাছটি নিয়ে যাত্রা পথে আসল বিপদ। একে একে রাক্ষুসে হাঙ্গরের সমুক্ষিন হতে লাগল। বেধে রাখা মাছটিকে হাঙ্গরের হাত থেকে রক্ষা করতে যোদ্ধ করতে হলো তাকে। একটা হাঙ্গরকে তার হার্পুনটা দিয়ে আঘাত করার সময় সেটাও হারালো। 

শেষ পর্যন্ত দীপে পৌচলো। নৌকা থেকে নেমে নিজের শোয়ার ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পরল সান্তিয়াগো। ভোরবেলা ছেলেটি এসে দেখল সে ঘুমুচ্ছে। এতক্ষণে অন্য জেলেরা সান্তিয়াগোর নৌকায় বেধে থাকা মার্লিন মাছের কঙ্কালটি দেখতে পেল। সবাই খুব আফসোস করছ, হায় এত বড় মাছটি পেয়েও শেষ পর্যন্ত শুধু মাছের কঙ্কালটি নিয়ে আসতে হলো। এদিকে সান্তিয়াগো তখনো ঘুমাচ্ছে, তখন সে সিংহের স্বপ্নে বিভোর।

মানুষ চেষ্টা করলে অনেক কিছুই পারে। সবকিছু না। ‘অনেক কিছু’র উপরে যেটা থাকে সেটা নিয়ন্ত্রণ করে ভাগ্য। যতেষ্ট বলবান এবং সুকৌশলি হওয়া সত্বেও সান্তিয়াগো মাছটিকে নিয়ে আসতে পারেন নি। তবে সে পরাজিত হন নি, শেষ পর্যন্ত সে হাঙ্গরের সাথে লড়ে গিয়েছেন। অনেক সমালোচকের ধারনা আর্নেস্ট হ্যামিংওয়ে এখানে সৃষ্টিকর্তাকে আবিষ্কার করেছেন। 

তাছাড়া মানুষ সামাজিক জীব। সে একা চলতে পারে না। সান্তিয়াগোর সাথে ম্যানোলিন থাকলে হয়তো সে মাছটিকে নিয়ে দ্বীপে ফিরতে পারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright © 2024 Educator's Note | Audioman by Catch Themes