স্বাধীনতা – সবার আগে জনতা

১৯৭১ সালের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশ সবসময় কোনো না কোনো বিদেশী জাতি দ্বারা শাসিত হয়েছে। হাজার বছর আগে বাংলার রাজা ছিল সেন। তাদের প্রথার নাম কুলীন। কুলিন প্রথায় জন্ম দিয়ে বিচার করা হতো মানুষের অধিকার। যেমন ব্রাহ্মণ কূলে জন্ম নেয়া শিশুর অধিকার আর অব্রাহ্মণ কূলে জন্ম নেয়া সন্তানের অধিকার সমান ছিল না। অব্রাহ্মণ শূদ্র কূলে (সম্প্রদায়ে) জন্ম নেয়া সন্তানদের ছিলোনা শিক্ষা গ্রহণের কোনো অধিকার। ভারতে হিন্দু-মুসলিমের মিশ্র শাসন, কালচারাল ডাইভার্সিটি, প্রতিষ্ঠিত হয় ১৫শ শতাব্দীতে। ১৭৫৭ সালে যে স্বাধীনতার সূর্য ডুবে যায় পলাশীর বাগানে তার জাগরণ আবার ঘটে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে। কবি এর তুলনা করেছেন শহীদ মিনারে সূর্য উদয়ের চিত্রকল্প দিয়ে। ১৯৭১ সালের ২৬সে মার্চ এর সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন ভুখন্ড বাংলাদেশ এর জন্ম হয় – প্রিয় বাংলাদেশ। আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাই। তবুও মানুষ স্বাধীনতার জন্যে আন্দোলন করে। এখনও। তাহলে কি এই স্বাধীনতার অর্থ? কি এর মূলমন্ত্র? একজনের স্বাধীনতা যেন অন্যজনের স্বাধীনতাকে হরণ না করে। সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই। কবি সেই স্বাধীনতা কে তুলনা করেছেন মধ্য রাতে রাস্তা হেঁটে শহীদ মিনারে সূর্য দেখা’র সাথে। তুলনা করেছেন খরস্রোতা নদীর সাথে, যে নদী স্রোতহারা। খুঁজতে গেলে তাকে যায় না ধরা। কারণ সে শুধুই কল্পনা, অধরা। অপ্রাপ্তির স্বাদ বুকে গভীর অন্তরালে বেঁচে থাকা। বেঁচে থাকার স্বাধীনতা। স্বাধীনতার অর্থ দেশ কাল বয়স, মানসিক ও সামাজিক অবস্থা ভেদে ভিন্ন অর্থ বহন করে। এই গীতে কবি জীবনের বিভিন্ন স্তরের স্বাধীনতার বিভিন্ন স্বরূপ বর্ণনা করেছেন। কৈশোর, তারুণ্য, ও যৌবনে স্বাধীনতার এক রূপ, আর তার আরেক রূপ বার্ধক্যে বা তার অনতি পূর্বে স্বাধীনতার অর্থ খুঁজে না পাওয়ায়। মত প্রকাশের স্বাধীনতায়। 

“স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে মহিকন্টকের ব্যানার কানাডা ও আমেরিকা প্রবাসী আমরা চারজন বের করলাম কবিতা, গান, যন্ত্রসংগীত আর ইতিহাসের অনবদ্য সমন্বয়ঃ স্বাধীনতা। জ্যাজ থেকে দেশী ক্ল্যাসিকাল, সে থেকে করুন সাইকেডেলিক, কয়েকটি জনরা ভ্রমন, আর ৭ স্তরের হারমোনি কোরাস। সাথে আছে ইতিহাস চিত্র। ভিন্নরূপে উদযাপন করুন স্বাধীনতা”- শরীফ সিদ্দিকী

(মধ্য রাতে রাস্তা হাঁটা, শহীদ মিনারে সূর্য দেখা, মোদের গর্ব মোদের আশা) সিন্ধু নদীর সভ্যতায় পাল সেন মোঘল বর্গী ধায় ১৭৫৭ ১৯৫২ স্বাধীনতা স্বাধীনতা, সবার আগে জনতা সোনার খনি স্বাধীনতা, লক্ষ প্রাণের ত্যাগের কথা। জাগে জনতা ফুলের কুড়ি আন্দোলনে সোনার তরী প্রভাতফেরি একুশে ফেব্রুয়ারি; স্বাধীনতা স্বাধীনতা, সবার আগে জনতা সোনার খনি স্বাধীনতা, লক্ষ প্রাণে ত্যাগের কথা। ভাষা আন্দোলন আর কি খবর বাক স্বাধীনতার হয় যে কবর ২৬সে মার্চ ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা স্বাধীনতা, সবার আগে জনতা সোনার খনি স্বাধীনতা, লক্ষ প্রাণের ত্যাগের কথা।

১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে এ গানের কবিতায় সুরারোপ করেন হামিদ জামান। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন হামিদ জামান ও শরীফ সিদ্দিকী। বাঁশিতে সুর সংযোজন করেছেন সৌগত সরকার। বিশেষ কৃতজ্ঞতা জাভেদ হোসেন। হামিদ এবং শরীফ এর কম্পোজিশনে কবিতা, গান ও যন্ত্র সংগীতের সুষম সমন্বয় যেন স্বাধীনতা কেন্দ্রিক মিশ্র রাগ তৈরী করে। 

কবির লেখা কবিতা দেশাত্মবোধক গান আকারে এ্যাপল কোম্পানীর জনপ্রিয় আইটিউনস, আমাজন, স্পটিফাই ও ইউটিউব মিউজিকসহ ১০০টির বেশি মিউজিক স্টোরে। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গানটি রিলিজ হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *